ওহে অহংকারী দাম্ভিক! ফিরে আসুন, এখনই সময় ফিরে আসার

মোহাম্মদ এনায়েতুল্লাহ:

“সাবধান হে মানুষেরা! জমিনে দম্ভভরে বিচরণ করো না, তুমি তো কখনোই পদভারে জমিন বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনোই পর্বত-প্রমাণ হতে পারবে না। (সুরা বনি ইসরাইল ৩৭)”

আসলেই আমাদের দম্ভ, অহংকার, অবিচার, স্বেচ্ছাচার, সীমাহীনভাবে শুধু নিজেকে বড় করার প্রবণতা, নির্লজ্জভাবে অন্ধত্ব পোষণ করে শুধুই নিজে বহু বড় মর্যাদার অধিকারী এমন চেতনায় চারপাশের মানুষকে সদা হেয় ভাবার হীনমন্যতা আজকের অবস্থায় নিয়ে এসেছে আমাদের। এখনো ঘুম ভাংছেনা, এখনো আঁকড়ে ধরে আছে হীনমন্যতার মিথ্যা মরিচিকায় মোড়ানো অহমের চাদর! কবে হুঁশ হবে? আদৌ কি হুঁশ হবে এই বেহায়াদের! আদৌ কি বুঝবে যে তারাই সব কিছু নয়, সব থেকে সর্বে সর্বা নয়। আদৌ কি জাগবে তাদের হৃদয়ে তারা যে লোক দেখানো আমল করে, লোক দেখানো জন হিতৈষী কাজ করে তার পিছনে রয়েছে মানুষের নিকট থেকে প্রশংসা পাওয়ার, বাহবা পাওয়ার এক উদগ্র নেশা। যা’ মহান আল্লাহ সম্যক অবগত।

এই কূপমণ্ডূক মানুষ গুলো হিতাহিত ভুলে গেছে, তাকে অক্ষরে অক্ষরে বিন্দু বিন্দু করে জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গোপন ও প্রকাশ্য কাজের সব হিসেবই দিতে হবে মহান পরওয়ারদিগার এর নিকট।
দম্ভ, অহংকার, মিথ্যাচার, মেকি অভিনয়, মেকি কান্না, মেকি আবরণে মোড়ানো সম্পর্কের নানা রকম ছলচাতুরী সব ফাঁস হয়ে যাবে সেদিন আল্লাহর দরবারে। এই মহা পরীক্ষা লগ্নে এখনই সময় তওবা করে, দয়া করে ফিরে আসুন। নিজেকে, অন্যকে, চারপাশকে চেনার ও বুঝার চেষ্টা করুন। বহুত ত’ হলো দেমাগ, অহংকার, বিত্তের নেশা, নিজেকে একা বড় করার প্রাণান্তকর প্রয়াশ। এবার অন্ততঃ দয়া করে চোখ খুলুন। সময় একেবারেই ক্রান্তিলগ্নে।

হে আল্লাহ আপনি আমাকে, আমার পরিবার-পরিজনকে, বন্ধু-শুভাকাঙ্খী যত আছে তাদেরকে, দেশ ও জাতিকে, নেতা ও নেত্রীকে, ভন্ড ও অ-ভন্ডকে, উদার ও হীনমন্যকে সহ সমগ্র মানব জাতিকে ক্ষমা করে দিন। আমাদের প্রতি দয়া করুন, রহম করুন। আপনি ছাড়া আমাদের আর বাঁচার কেউ নেই। আপনার দয়া, রহমত ও ক্ষমতার অস্তিত্ব এই আমি গুনাহগার গোলাম প্রতিটি মূহুর্তে টের পাই। আপনার দয়া ছাড়া আমার এক সেকেন্ডও বেঁচে থাকার কোন সাধ্য ছিলো না এবং নেই মাবুদ। আমাকে, আমার পরিবারকে, আমার জাতিকে আপনি আপনার রহমতের চাদরে ঢেকে দিন। দুনিয়া ও আখিরাতে সর্বোত্তম কল্যাণ আমাদের জন্য বরাদ্দ করুন। আমাদের কেউ নেই, কিচ্ছু নেই, কোন ক্ষমতা নেই। আমাদের ভেতরে বিন্দুমাত্র অহংকার থাকলে তা’ আপনি নিজগুনে ক্ষমা করে দিন।

লেখকঃ বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক