হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ: বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্কের শাস্তি কি বাতিল হবে?
করোনার মধ্যেই দেশে ‘পঙ্গপাল’
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে করোনা সংকটের মধ্যেই পঙ্গপাল সদৃশ এক প্রকার কীটপতঙ্গ দেখা গেছে। নতুন এই কীটের দেখা মিলেছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায়। সেটা পঙ্গপাল কি না সেটা এখনো নিশ্চিত করতে পারেননি কীট বিজ্ঞানীরা। তবে এখনই যদি ব্যবস্থা নেওয়া না হয় তাহলে এটি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের লম্বরী গ্রামের সোহেল সিকদারের বসতভিটার গাছপালা ও বাগানের গাছে এই পঙ্গপাল সদৃশ পোকার দেখা মেলে। শত শত পোকা দল বেধে গাছের পাতা ও শাখায় বসে পাতা খেয়ে নষ্ট করছে। এ থেকে মুক্তি পেতে তিনি গাছের গোড়ায় ধোঁয়া দেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। বরং দিন দিন পোকার সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
এর পরই ওই কীটের একটি ভিডিও করে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন সোহেল সিকদার। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর জেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে ছবি তুলে তা কৃষি গবেষণাগারে পাঠানো হয়।
টেকনাফ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, পোকার ছবি কক্সবাজার জেলা অফিসে পাঠিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি দেখতে পঙ্গপাল মতো। পঙ্গপালের পাখা থাকে এবং সহজে উড়তে পারে। এটির তেমন পাখা দেখা যায়নি।
তিনি বলেন, যেহেতু কাঁচা পাতা খেয়ে ফেলছে তাই এটি ক্ষতিকর পোকা। তাই এসব পোকা যাতে অন্য কোথাও ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য কিটনাশক স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পঙ্গপাল দেখতে ঘাষ ফড়িংয়ের সমগোত্রীয় একটি প্রাণী। আচরণ পরিবর্তন করে এগুলো দল বেঁধে হয়ে ওঠে পঙ্গপাল। উজাড় করে দেয় মাঠের পর মাঠ ক্ষেত। ১০ লাখ পঙ্গপাল একদিনে ৩৫ হাজার মানুষের খাবার সাবাড় করে দিতে পারে বলে মনে করা হয়।
বিগত কয়েক মাসে মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকার অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে পঙ্গপাল। ওই অঞ্চলে লাখ লাখ হেক্টর জমির ফসলও নষ্ট করেছে এসব কীট। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্য এমনকি পাকিস্তানেও পঙ্গপালের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর পরই বিজ্ঞানীরা শঙ্কা প্রকাশ করেন যে, পঙ্গপাল এবার ভারত ও বাংলাদেশের দিকে ধাবিত হতে পারে।
অন্যদিকে, কীটবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, টেকনাফ থেকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও পর্যালোচনা করা হয়েছে। পোকাগুলো ঘাস ফড়িংয়ের আচরণ পরিবর্তন করে ধীরে ধীরে দলবদ্ধ হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অবশ্য কক্সবাজার জেলার কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, শত শত পোকা দল বেঁধে গাছের পাতা খেয়ে ফেললেও সেগুলো পঙ্গপাল কিনা তা নিশ্চিত নয়।
ড. সাখাওয়াত হোসেন বলছেন, এখনই যদি এই কীট নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে এগুলো পরবর্তীতে পঙ্গপাল হয়ে যাবে। সুতরাং এখনই একে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।