হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ: বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্কের শাস্তি কি বাতিল হবে?
শেখ হাসিনা পরিবারের দুঃশাসনের কবলে বাংলাদেশ
মতামত
শাকিলা পাতা (এসপি)|
৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা, সামাজিক ন্যায়বিচার, বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও ধর্মনিরপেক্ষতা। কিন্তু ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বার বার সংবিধান পরিবর্তন করে গণতন্ত্রকে ভুলন্ঠিত করে গড়ে তোলে একনায়কতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। প্রশাসন, পুলিশ, আমলা, মিডিয়া ও আওয়ামীপন্থী ব্যবসায়ীদের নিয়ে হরিলুট, দুর্নীতি, অপশাসনের খেলায় মেতে উঠে শেখ হাসিনা সরকার। তার বোন শেখ রেহানা ১০% কমিশন নামে পরিচিত। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নামে বাংলাদেশের ব্যাংক লুট করে সেই অর্থ দিয়ে শেখ হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার কন্যা সায়মা ইসলাম পুতুল বিদেশে গড়ে তুলেছেন বিলাসী জীবন।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও রাজনৈতিক দলের উপর শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের দমন-নির্যাতন
বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লেখ ছিল নির্বাচন হবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সংবিধান থেকে তত্ত্বাধায়ক সরকার ব্যবস্থা তুলে দিয়ে নিজেদের অধীনে নির্বাচন করে। নির্বাচনের আগের রাতে কেন্দ্রগুলোতে আওয়ামী লীগের কর্মীরা পুলিশি পাহারায় ভোট দিয়ে সাধারণ জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী বিরোধী দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা ও আমানসিক নির্যাতন করে। শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনায় রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের আটক করে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাংলাদেশকে বিরোধী দল ছাড়া সংসদ গড়ে তোলে। এমনকি নানা ধরনের আইন পরিবর্তন করে ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করে। শেখ হাসিনা তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের পার্লামেন্টের সদস্য করেন, মন্ত্রীর পদ দেন ও নানা ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন শেখ হাসিনা সরকারকে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার জন্য বার বার বললেও তিনি ও তার দল প্রশাসনের সহায়তায় ডেমো নির্বাচন করে পুনরায় নিজেরদের আসন পাকাপোক্ত করেন।
শেখ রেহানার ১০% কমিশন বাণিজ্য ও অর্থলোপাট
শেখ রেহানার বিরুদ্ধে তার পছন্দের ব্যক্তিদের মন্ত্রী পদে বসিয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প থেকে ১০% কমিশন গ্রহণ করার নানান অভিযোগ উঠেছে। রেল, স্বাস্থ্য, বাণিজ্য, বিমান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, শ্রম ও কর্মসংস্থান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় শেখ রেহানার দখলে। তার অনুমতিতে কাজ করে পুতুলমন্ত্রী ও আমলারা নানা ধরনের সুবিধা ভোগ করেন।
সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ডিজিটাল দুর্নীতি ও বেপরোয়া জীবনযাপন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দীর্ঘদিন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে আইন লঙ্ঘন ও অনৈতিক কাজে বেশ কয়েকবার গ্রেফতারও হন তিনি এবং বিচারে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১০০ কোটি টাকার উৎস কি তা জানতে আন্তর্জাতিকভাবে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে ২০০৫-এর মার্চে সজীব ওয়াজেদ জয় ‘জয় ওয়াজেদ কনসাল্টিং ও সিম গ্লোবাল সার্ভিস’ নামে দুটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সরকারের সমস্ত আইসিটির কাজ পান আর সেখান থেকে অর্থ লোপাট করেন। তাছাড়া জয় যুক্তরাষ্ট্রে কোনো চাকরি করেন না। তারপরও তিনি ২০০৬-এর ১২ মে তার নিজের নামে ৩৮১৭ বেলম্যানয়, ফলস চার্চ ভার্জিনিয়ায় ১০ লাখ ডলার দিয়েএকটি বাড়ি কেনেন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে জয় ও তার স্ত্রী যৌথ মালিকানাধীন আরও একটি বাড়ি ৭ লাখ ৪৯ হাজার ডলার দিয়ে কিনেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে পুতুল ও তার স্বামীর তিনটি বাড়ি রয়েছে। মূলত জয়, তার বোন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং তার স্বামী খন্দকার এম হোসেন-এর ব্যবসা বাণিজ্য ও সম্পদের দিকে তাকালে আলাদিনের চেরাগের মতোই মনে হবে।
লেখকঃ মোছা. শাকিলা শারমিন
সাংবাদিক ও ব্লগার
shakilapata11@gmail.com