হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ: বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্কের শাস্তি কি বাতিল হবে?
সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর চরবাসীর পণ্য পরিবহনে ভরসা ঘোড়ার গাড়ি
আবির হোসাইন শাহিন: সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীর চর এলাকার মানুষের পণ্য সামগ্রী পরিবহণে এখন ঘোড়ারগাড়িই একমাত্র ভরসা। উপজেলার সোনাতুনি, কৈজুরি, গালা, খুকনি ও জালালপুর ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে যমুনা নদী। শুষ্ক মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে এ নদীর পানি শুকিয়ে ধূ ধূ বালুর চরে পরিণত হয়েছে। যেটুকু পানি আছে সেখানেও অসংখ্য ডুবচর জেগে ওঠায় তা মরা খালে পরিণত হয়েছে। এ কারণে এখন আর এ নদীতে আগের মত নৌকা চলে না। ফলে চরবাসির নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী পরিবহণে একমাত্র ভরসা ঘোড়ারগাড়ি।
এ বিষয়ে বানতিয়ার বাজারের হার্ডওয়ার দোকানদার ও ছোট চানতারা বাজারের মুদি দোকানদার সোলায়মান হোসেন বলেন, নদীতে পানি না থাকায় নৌকা চলে না। দোকানের মালপত্র মাথায় নিয়ে দুপুরের রোদে তপ্ত ধূ ধূ বালুর চর পাড়ি দিতে খুবই কষ্ট হয়। ঘোড়ার গাড়িতে মাল নিতে গেলে বস্তা প্রতি ৩/৪ গুণ বেশি ভাড়া দিতে হয়। এতে পরিবহণ খরচ বেশি হয়। তখন লাভ তো দূরের কথা উল্টো আরো লোকসান হয়।
সোনাতুনি গ্রামের পল্লিচিকিৎসক জিয়াউল হক বলেন, যমুনায় পানি না থাকায় জরুরী প্রয়োজনে মূমুর্ষ রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া হয় এই ঘোড়ারগাড়িতে করেই। বিশেষ করে ডেলিভারি রোগীকে ঘোড়ারগাড়ি ছাড়া নেওয়া একেবারেই অসম্ভব। ফলে শুষ্কমৌসুমে চরবাসির যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণের একমাত্র ভরসা ঘোড়ারগাড়ি।
এ বিষয়ে সোনাতুনি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে যমুনায় ড্রেজিং না হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে নদী নব্য হারায়। আর বর্ষা মৌসুমে পানি ধারণ ক্ষমতা না থাকায় বাড়িঘর ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলিন হয়। ফলে আমার ইউনিয়নের মানুষ প্রতি বছর সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, মেগা প্রকল্পের আওতায় কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীরবন্দর সচল করতে অচিরেই আরিচা থেকে চিলমারীবন্দর পর্যন্ত যমুনা নদীর ড্রেজিং কাজ শুরু হবে। এ কাজ শুরু হলে পর্যায়ক্রমে আমাদের এ অংশেও ড্রেজিং হয়ে যাবে। তখন আর এ সমস্যা থাকবে না।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানিউন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ডেল্টা প্রকল্পের আওতায় একটি মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারীরবন্দর সচল করতে অচিরেই আরিচা থেকে চিলমারীরবন্দর পর্যন্ত যমুনা নদীর ড্রেজিং কাজ শুরু হবে। এ কাজ শুরু হলে পর্যায়ক্রমে আমাদের এ অংশের শাখা নদীসহ সম্পূর্ণটাই ড্রেজিং হয়ে যাবে। তখন এ এলাকার নাব্য সংকট দূর হওয়ার পাশাপাশি আবাদী জমি ও বাড়িঘর ভাঙ্গণের হাত থেকে রক্ষা পাবে। ফলে তখন আর এ সমস্যা থাকবে না।