বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৬২ হাজার। মৃত ৩০,৭৫১ জন


জনবার্তা অনলাইনঃ করোনা ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা রোববার দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬২ হাজারে। মারা গেছেন ৩০,৭৫১ জন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লাখ ৪২ হাজার মানুষ। সবথেকে বেশি আক্রান্ত এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। গত এক সপ্তাহে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। সেখানে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার মার্কিনির। তবে মৃতের সংখ্যায় গত ২৪ ঘন্টায় প্রথমেই রয়েছে ইতালি। গত একদিনে স্পেনে করোনা আক্রান্ত হয়ে এ যাবত কালের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেখানে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এদিন স্পেনে মারা গেছেন মোট ৮৪৪ জন। রোববার সেখানে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৯৮২ জনে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজারে। সর্বশেষ একদিনে বেড়েছে ৮০০০ এর বেশি। মোট সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ১৩ হাজার জন।

এদিকে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব থেকে জানা গেছে, স্পেনে আক্রান্তদের একটি বড় অংশই করোনার সঙ্গে লড়াইরত স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেখানে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে যে পরিমাণ স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তা বিশ্বের অন্য দেশগুলোর থেকে বেশি। রয়টার্স জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় ইতালিতে ৮৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০,০২৩। দেশটি কয়েক সপ্তাহ ধরে পুরোপুরি লকডাউন হয়ে আছে। কিন্তু তাতেও কমছে না মৃত্যুর সংখ্যা। দেশটির সরকার জনগণকে বাড়ির বাইরে নো যেতে অনুরোধ জানিয়ে যাচ্ছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইতালির কর্তৃপক্ষ চলাফেরা এবং স্বাভাবিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ৩রা এপ্রিল পর্যন্ত বাড়াতে পারে। ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা লোমবার্দি দেশটির সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। সেখানে করোনায় মৃত্যুর হার পূর্বের তুলনায় আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ইতালিতে নতুন করে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে প্রায় ৬ হাজার। দেশটিতে মোট আক্রান্ত প্রায় ৯৩ হাজার। কয়েকদিনে সব থেকে বেশি করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ফলে তীব্র সংকটে পড়েছে দেশটির স্বাস্থ্যখাত। ইতিমধ্যে সরঞ্জাম চেয়ে বিভিন্ন দেশের কাছে আবেদন জানিয়েছে মার্কিন সরকার। সেখানকার গবেষকরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে মারা যেতে পারে কয়েক লাখ মানুষ।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালি ও স্পেনের পর সব থেকে খারাপ অবস্থা জার্মানির। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা রোববার দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ হাজার। প্রাণ হারিয়েছেন ৪৩৩ জন। একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা জার্মানির জন্য। তারপরেও দেশটিতে মৃত্যুর হার মহাদেশটিতে সব থেকে কম। ফ্রান্সে আক্রান্ত বেড়ে শনিবার দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৭,৫৪০ জনে। এর মধ্যে মারা গেছেন কমপক্ষে ২৩১৪। এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কোয়ারেন্টিনে থেকেই তিনি সরকার পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ হাজার জন। বৃটেনে মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সব থেকে গুরুতর অবস্থা পাকিস্তানের। দেশটিতে আক্রান্ত দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। সেখানে মারা গেছেন ১২ জন ও সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৮ জন। অবস্থা আরো গুরুতর হওয়ার পূর্বে লকডাউন ঘোষণায় চাপ বাড়ছে সরকারের ওপর। তবে নাজুক অর্থনীতির কথা বিবেচনায় লকডাউন ঘোষণার বিরোধিতা করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। অপরদিকে ভারতে শনিবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৯৮৭ জন। সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জন। দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ শ্রীলঙ্কায় আক্রান্ত ১০০ ছাড়িয়েছে। রোববার দেশটি করোনায় তাদের প্রথম মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।