আড়াইশ পরিবারে খুশির আলো ছড়িয়ে দিলো খুশির বক্স

ছবিঃ করোনা পরিস্থিতিতে দরিদ্র পরিবারের জন্য খুশির বক্স প্রস্তুতে ব্যস্ত সংগঠনটির সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সারাবিশ্বে চলমান করোনা মহামারীর কারণে বাংলাদেশেও চলছে অঘোষিত লকডাউন। এতে করে থমকে আছে দেশের অর্থনীতি। দেশের সিংহভাগ কর্মজীবী কার্যত ঘরবন্দী হয়ে আছে। আর এতে করে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। এদের বৃহদাংশেরই অবস্থা এমন যে একদিন কাজে বের না হলে পরের দিন চুলায় আগুন জ্বলে না। এমন অবস্থাতে ২৫০ নিম্ন আয়ের পরিবারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দিয়েছে তরুণদের নিয়ে গঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন Box Of Happiness বা খুশীর বক্স।

জানা যায়, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি এরই মধ্যে গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, পিরোজপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং লক্ষীপুরে বসবাসরত দরিদ্র পরিবারগুলোতে তাদের খুশির বক্স পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে, যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা।

Box Of Happiness বা খুশীর বক্স নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি ২০১৯ সালের রমজান মাসে গাজীপুরের টঙ্গীতে প্রথম আত্মপ্রকাশ করার পর সে বছরের রোজার ঈদে দরিদ্র পরিবারগুলোতে ঈদসামগ্রী পৌঁছে দেয়া, কুরবানির ঈদে গরু জবাই করে গোশতো বিতরণ করা, বন্যাদূর্গত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো এবং শীতকালে বিভিন্ন জেলায় দরিদ্র পরিবারগুলোতে শীতবস্ত্র এবং কম্বল বিতরণসহ সেবামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

খুশির বক্সের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা লাইন ধরিয়ে বা ব্যানার ব্যবহার করে কাউকে সহায়তা করে না। বরং খুশির বক্স নামে তাদের সহায়তামূলক প্যাকেটটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়। তারা মনে করে লাইনে দাঁড় করিয়ে ছবি তুলে কাউকে সহায়তা করলে তাদেরকে অপমান করা হয়, আর এতে করে অনেকে সহায়তা নিতেও দ্বিধাবোধ করে।

খুশির বক্সের অর্থের উৎস প্রধানত তাদের নিজেদের এবং পরিচিতজনদের নিকট থেকে বিভিন্ন সেবা কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে এককালীন দানের অর্থ যা তারা সরাসরি দেখা করে বা ফোনের মাধ্যমে দাতাদের নিকট থেকে সংগ্রহ করে থাকে। এ ছাড়াও অর্থ সংগ্রহের জন্যে তারা তাদের ফেসবুক গ্রুপকে ব্যবহার করে থাকে যার ওয়েব লিংক হচ্ছে https://www.facebook.com/ BoxOfHappinessBD।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান সমন্বয়ক নাবিল ইউসুফের সাথে কথা হয় জনবার্তার এই প্রতিবেদকের। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, খুশির বক্স কী লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, একটা সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি আমরা, কাজ করে যাচ্ছি সেই লক্ষ্যে।সৃষ্টির সেবায় নিজেদেরকে বিলিয়ে দিয়ে স্রষ্টার নৈকট্য লাভ করাই উদ্দ্যেশ্য আমাদের। তিনি বলেন, দাতাদের সহায়তা এবং সক্রিয় কর্মীদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এরই মধ্যে আমরা সাফল্যের সাথে কয়েকটি সেবা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে আরো নতুন নতুন প্রজেক্ট যেমন কোন অসহায় পরিবারকে স্বাবলম্বী করে তোলা, অসহায় শিশুদের পড়ালেখার ব্যবস্থা করা, গৃহহীনদের জন্যে ঘর তুলে দেয়া ইত্যাদি সেবামূলক কাজ  করার ইচ্ছে আছে আমাদের ইনশাআল্লাহ। তিনি আরো বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সবাইকে যারা নানাভাবে আমাদেরকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন, আর্থিকভাবে বা শ্রমের মাধ্যমে।

নাবিল ইউসুফ জানান, এডভোকেট শামিম, মোহাম্মদ হোযাইফা, আরাফাত রায়হান, মোঃ কাশফুজ্জুন্নুন, আবদুল্লাহ শিবলী, তাহসিন জাহান, আবদুল ওহাব, নজরুল ইসলাম, মোঃ তারেক, লাবিদ ইলিয়াস এবং আসিফ হেলাল প্রমুখ খুশির বক্সের প্রতিষ্ঠা থেকে আজ পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে সংগঠনটির অগ্রযাত্রায় ভুমিকা রেখে যাচ্ছেন এবং সফলতার সাথে বিভিন্ন প্রজেক্টের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছেন ।